Showing posts with label গাছ. Show all posts
Showing posts with label গাছ. Show all posts

Wednesday 27 October 2021

নিরবিশী ঘাস

চারিদিকে সবুজের মেলা এরই মাঝে উঁকি দিচ্ছে সাদা সাদা ফুল। সেই সাদা ফুলগুলো নিয়ে বাচ্চারা ডিম বানাচ্ছে।তবে সেদিন এখন আর নেই।শুধু র‍য়ে গিয়েছে  এই ফুলগুলি................................



ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত
গোথুবী
                                




প্রায়শই রাস্তার পাশে,ছায়াযুক্ত তৃণভূমিতে এর দেখা মেলা  শুধু ঘাস্ফুল হিসেবে পরিচিত হলেও এর আসল নাম নিরিবিশী ঘাস। এর আরো নাম রয়েছে নিরবিশী ,নিরবিশা,গোথুবী, শ্বেত গোথুবী। 

এর ইংরেজী নাম- white water sedge,hitehead spikesedge 
বৈজ্ঞানিক নাম -Kyllinga nemoralis

এদের সাধারণত রাইজোমের মাধ্যমে বংশবিস্তার হয়ে থাকে।কান্ডগুলি  ২২" বা ৫০ সে.মি পর্যন্ত হতে পারে,পাতাগুলো লম্বাটে। ফুলগুলি সাদা অনেকটা ছোট ভুট্টার মতো।

চিকিৎসাঃ    
  •  চায়নাতে ঠান্ডা,ব্রঙ্কাইটিস,ম্যালেরিয়া,আরথাইটিস
  • মালেশিয়াতে ডায়রিয়ার জন্য
  • এছাড়া জয়েন্ট ব্যথার চিকিৎসার জন্য এর ব্যবহার দেখা যায়।

আমাদের ব্লগ সম্পর্কিত কোন মন্তব্য কিংবা আপনার প্রিয় গাছের নাম জানাতে আমাদের লিখে পাঠাতে পারেন।😊



Sunday 11 October 2020

গাছের যত্নে চা-পাতা

চা খান না,এমন কম লোকই পাওয়া যাবে।।চা শুধু মনকেই চাঙা করে তোলে না সাথে সাথে গাছের যত্নেও এর রয়েছে ভূমিকা।






কিভাবে ব্যবহার করা যাবে- 

বাসায় বানানো চায়ের লিকার কিংবা দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।এরপর এটিকে জৈব সারে পরিণত করতে একটি পাত্রে জমিয়ে রাখতে পারেন ১০ থেকে ১৫দিন। ছাদ বাগানের গাছে অথবা টবে ভালো সার হিসেবে কাজ করবে।গোলাপগাছ,পাতাবাহার গাছের জন্য খুবই উপকারী চায়ের লিকার। চায়ের লিকারের শক্তি বেশি থাকায় ৪ ভাগের তিন ভাগ  বেলে দো-আঁশ এবং এক ভাগ লিকার ব্যবহার করা যেতে পারে।গাছের বৃদ্ধি ভালো না হলে  পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দেয়া যায়.



সতর্কতাঃ

 চায়ের লিকার গাছে এক থেকে দেড় মাস পর পর দেয়া যায়,কিন্তু পরিমাণ যাতে বেশি না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সরাসরি লিকার অথবা অব্যবহৃত লিকার ব্যবহার করা উচিত নয়।দুধ-চিনি মেশানো লিকার গাছের পিপড়ার উপদ্রব বাড়াতে পারে।

Thursday 30 July 2020

জবা(China rose)

জবা গাছটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। আমাদের আশেপাশে অনেক ধরনের জবা দেখা যায়-্লাল,হ্লুদ,গোলাপী,সাদা ইত্যাদি।
সাধারণত গরম ও শরৎ-এই ফুলে দেখা মেলে। এর অনেক গুনাগুণ রয়েছে। ঘরের আঙ্গিনায়,ছাদে অথবা বারান্দার শোভা বাড়ায়।
জবার  উপকারিতা জানতে






কিভাবে রোপণ করবোঃ 

জবা তিন ভাবে লাগানো যায়।-বীজের মাধ্যমে,শাখাকলাম, মূলের মাধ্যমে।
জবা গাছ সব ধরনের মাটিতেই জন্মে তবে দো-আশঁ মাটি বা বেলে মাটি এর জন্য ভালো। এর সাথে কিছুটা খৈল,হাড়ের গুড়ো,গোবর মেশানো ভালো। টবের নিচে ড্রেনেজ ব্যবস্থা রেখে মাটি দিয়ে রোপণ করতে হবে।বর্ষাকালের ১৫-১৬দিন পর লিকুইড সার দিতে হবে।একটি কাঠি পুঁতে দিতে হবে পাশে।গাছ লাগানোর পর চাপান সার বা ঝিনুক চুন দিতে পারেন।

গাছের যত্নঃ

পানি দিতে হবে নিয়মিত হবে তবে বেশি বা কম নয়। গোড়ায় পানি না জমে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।মাসে দু'বার মাটি খুচিঁয়ে দিতে হবে।গাছটি বড় হলে ডগাটি ছেটে দিতে হবে। এরপর কয়েকদিন পর কান্ডের পাশ থেকে শাখা বের হবে, তাদের মধ্যে কয়েকটি শাখা রেখে বাকীগুলি ছিড়ে ফেলতে হবে। এরপর গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে দিতে হবে। সতেজ গাছ রাখতে হলে একটি সোজা শাখা ও ৪-৫ টি পার্শ্ব শাখা রাখতে হবে। গাছের পার্শ্ব কুঁড়িগুলি ছাটলে, অনেক ফুল হবে।  বেশী ফুল পেতে হলে গাছের আগা ভেঙ্গে দিন। বর্ষাকালের প্রথমে ও শরৎকালে ডাল ছাঁটতে হবে। ছাঁটাই এর পরে চাউবান্টিয়া পেন্ট ব্যবহার করুন।

জবা ফুলের পোকামাকড়  প্রতিকার:

জবাগাছের ক্ষেত্রে ছত্রাকের আক্রমনের সম্মুখীন হতে হয়। গাছে ছত্রাক/মিলিবাগ আক্রান্ত হলে, ফুলের বোটা নরম হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মাসে একবার নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে ভাল হয়।  থ্রিপস ভাইরাস জবার কুঁড়ি ঝড়িয়ে দেয়। এতে পাতা কুঁকড়িয়ে যায়। মনোফিল,নিকোটিন সালফেট,রোগার প্রয়োগ করুন।বোর নের অভাবে ফুল আসা কমে যেতে পারে এজন্য বোরিক এসিড ৫লিটার পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে মাটি্র জন্য যত টুকু জরুরি তা ঢেলে দিতে পারেন।মাটি পুষ্টি পূরণের জন্য ভাতের মাড় পানির সাথে মিশিয়ে ছেকে মাটিতে দিতে পারেন ।

Friday 17 July 2020

গাছের যত্ন

একটি সুন্দর ছাদ বাগান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিচর্যার ভূমিকা অনেক,আমরা প্রায় সময় গাছ তো লাগিয়ে ফেলি কিন্তু রক্ষনাবেক্ষণের  অভাবে  ছাদবাগান নষ্ট হয়ে যায়,ফলে সময় এবং অর্থ দুটোই নষ্ট হয়।তাই বাগানের যত্ন নিতে হবে যথাযথ ভাবে।


কিভাবে নিবেন যত্নঃ
একেক ধরনের গাছের যত্নের প্রক্রিয়া আলাদা আলাদা ধরনের হয়ে থাকে,তবে কিছু সাধারণ বিষয় রয়েছে,যেমন চারা গাছের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে,এখন যেহেতু জুলাই মাস প্রায়ই সময় বৃষ্টি দেখা মেলে এজন্য বৃষ্টি আসার আগেই গাছটিকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে,যাতে বৃষ্টির পানিতে গাছ নষ্ট না হয়ে যায়।চারা গাছের পানি দেয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে,অতিরিক্ত পানি জমে গাছের

ছবি-সংগ্রহিত
হঠাৎ এমন দমকা হাওয়া আর বৃষ্টিতে যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় আপনার গাছ

গোড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে,শুধু মাত্র গাছের গোড়া ঠান্ডা থাকার জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকুই ব্যবহার করতে হবে।
অনেক সময় ছোট টমেটো,পেয়ারা পাখিরা খেয়ে ফেলতে পারে। এজ্ন্য বাজারের কাপড়ের ব্যাগ কিংবা জালি ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এছাড়া উঁচু করে তারের জালি কিংবা জাল দিয়ে পুরো ছাদের ওপর ও পাশটা ঢেকে দেয়া যেতে পা্রে।
রোগ বালাই দমনে  কীটনাশক ব্যবহার না করে  জৈবিক পদ্ধতিতেই রোগ বালাই দমন করা যেতে পারে। একেবারেই সম্ভব না হলে পরামর্শ অনুযায়ি অনুমোদিত মাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু দিন পরপরই গাছের রোগাক্রান্ত ও মরা ডালগুলো ছাঁটাই করতে হবে এবং কাটা স্থানে বোর্দপেস্ট লাগাতে হবে। গাছের ধরন অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ পরিচর্যা করতে হবে যেমন কুল খাওয়ার পর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি গাছের সব ডাল কেঁটে দিতে হবে। মাঝেম ধ্যে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় সেগুলো সময় মতো কেটে ফেলতে হবে।
 বছর না হলেও ১ বছর পরপর টবের পুরনো মাটি পরিবর্তন করে নতুন গোবর মিশ্রিত মাটি দিয়ে পুনরায় টবটি-ড্রামটি ভরে দিতে হবে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছ যেন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
গাছ যেন পোকামাকড় আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সময় ছাদে পানির ট্যাঙ্ক  থাকে পোকা মাকড় তাতে প্রবেশ করতে হবে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

ছাদ বাগানের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূূর্ণ বিষয় হলো এর সেচ ও নিষ্কাসন ব্যবস্থা। তবে যেন পানি বের হয়ে  যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে নয়়তো অতিরিক্ত আদ্রতায় গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এক্ষেত্রে ঝাঝঁরি দিয়ে পানি দেয়া যেতে পারে।চিকন পাইপ ব্যবহার করা যেতে পারে অনচথ্যায় হাত দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে।

Thursday 16 July 2020

ছাদ বাগান কিভাবে করবো

ছোট পরিসরে করতে চাইলে - ছাদ বাগান বর্তমানে জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এই বাগান করা যেমন সহজ তেমনি হাতের কাছের অনেক জিনিসেই সহজেই ছোট বাগান গড়ে উঠতে পারে। ছোট পরিসরে করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে-ফেলে দেয়া কৌটা,দইয়ের বাটি  অথবা ছোট টব  ইত্যাদি। আপনার বারান্দাতে,জানালার পাশে এসব জিনিস ছোট হওয়ায় খুব সহজেই জায়গা হয়ে যাবে।তাতে ফেলে দিতে পারেন  কাঁচা  মরিচের বীজ অথবা  বোম্বে মরিচের বীজ অথবা   ধনে পাতার নিচের অংশটি ফেলে না দিয়ে পুতে ফেলতে পারেন। খুব সহজেই দেখবেন একটু যত্নেই বেড়ে উঠেছে।এছাড়া অ্যালোভেরা,পাতাবাহার,থানকুনি পাতা,তুলসি,পাথর কুচির মতো গাছ লাগাতে পারেন যা আপনার ঔষুধি চাহিদাও পূরন করবে।লাগাতে পারেন গুল্ম জাতীয় ফুল গাছ- গাঁদা,গোলাপ।
ফেলে দেয়া কৌটাতে লাগাতে পারেন মরিচের মত ছোট গাছ

            বারান্দাতেই হতে পারে আপনার  ছোট বাগান
                                     


বড় পরিসরে করার জন্য- বড় পরিসরে  করতে চাইলে ব্যবহার করা যেতে পারে ড্রাম,  মাটির টব, স্টিল বা ফ লের প্লাস্টিক ট্রে। অনেক সময়  ভাঙা  বালতি, অব্যবহৃত তেলের বোতলও ছোটখাটো গাছ রোপণের জন্য ব্যবহার করা যায়।  ছাদের সুবিধা মতো স্থানে স্থায়ী বেড (ছাদ ও বেডে মাঝে ফাঁকা রাখতে হবে) স্থাপন করা যেতে পারে। এসব বেডে মূলত সবজি, শাক চাষ করা যায়। চাইলে লাগানো যায় ফুলগাছ। স্থায়ী বেড বানাতে না চাইলে পুরনো বাথটাব অনেক জায়গায় বেড হিসেবে ব্যবহার করা হয়।পুরোনো বাথটাব আপনার আশেপাশের ভাঙ্গারি দোকানেই পেয়ে যাবেন।                   
গাছের জন্য তৈরি করতে পারেন মাচা
                       

যেহেতু ছাদ বাগান স্বল্প পরিসরে গড়ে তোলা হয় কাজেই এর যত্ন-এর দিকে সব সময় নজর রাখতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রথমেই সংগ্রহ করে নিতে হবে। এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে সিকেচার, কোদাল, কাচি, ঝরনা, বালতি, করাত, খুরপি, স্প্রে মেশিন এসব। চারা রোপণের আগে চারার উচ্চতা, শিকড়ের প্রকৃতি, সহিষ্ণুতা এসব জিনিসের প্রতি নজর রাখতে হবে। সব চারা ও গাছ ছাদ বাগানের জন্য উপযুক্ত না। 

ফুলের মেলায় ভরে  উঠুক আপনার বাগান
সাধারণত ফল গাছের জন্য হাফ ড্রাম ব্যবহার করা উচিত। এর তলদেশে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য ১ ইঞ্চি ব্যাসের ৫-৬টি ছিদ্র রাখতে হবে। ছিদ্রগুলোর ওপর মাটির টবের ভাঙা টুকরো বসিয়ে দিতে হবে। ড্রামের তলদেশে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ইটের খোয়া বিছিয়ে তার ওপর বালি  দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।  সমপরিমাণ দো-আঁশ মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ড্রামটির দুই তৃতীয়াংশ ভরার পর হাফ ড্রাম অনুযায়ী ড্রাম প্রতি মিশ্র সার আনুমানিক ৫০-১০০ গ্রাম প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে এবং সম্পূর্ণ ড্রামটি মাটি দিযে ভর্তি করে নিতে হবে। ১৫ দিন পর ড্রামের ঠিক মাঝে মাটির বল পরিমাণ গর্ত করে কাক্সিক্ষত গাছটি রোপণ করতে হবে। এ সময় চারা গাছটির অতিরিক্ত শিকড়-মরা শিকড়গুলো কেটে ফেলতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে মাটির বলটি যেন ভেঙে না যায়। রোপিত গাছটিতে খুঁটি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। রোপণের পর গাছের গোড়া ভালোভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। সময়ে সময়ে প্রয়োজনমতো গাছে পানি সেচ ও উপরি সার প্রয়োগ বালাই দমন ব্যবস্থা নিতে হবে। চাইলে   টব বা ড্রাম এ মাটি দেয়ার আগেই মাটি শোধন করে নেয়া যেতে পারে। গাছের বাড়-বাড়তি অনুযায়ী ২ বারে টব প্রতি ৫০-১০০ গ্রাম মিশ্র সার প্রয়োগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।   
সার বা মাটি তৈরির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নেয়াই ভালো 

কেন দরকার ছাদবাগান

আমাদের শহুরে জীবনকে একটু খানি সবুজের ছোঁয়া দিতে ছাদ বাগানের ভূমিকার কমতি নেই। চারিদিকে একের পর এক গড়ে উঠেছে ইঠ কাঠের দালান,সেখানে কোথায় করবেন বাগান।আপনার ছোট বারান্দাটি কিংবা ছাদটিতে কিন্তু হয়ে উঠতে  আপনার শখের বাগান।সবুজ ভরা গ্রাম বাংলাকে ধরে রাখতে এখনি অনেকেই চায় তাদের আবাসে ধরে রাখতে। শৌখিন মানুষরা তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখতে নিজস্ব চেষ্টায় গড়ে তুলছেন ছাদ বাগান।
সেই বাগান যে শুধু শৌখিনতার অংশ তা কিন্ত নয় বরং সময়ের সাথে সাথে বাগানের চাষ করা সবজি মেটাচ্ছে পুষ্টির চাহিদা।


   ছাদে বাগান কোনো নতুন ধারণা নয়। অতি প্রাচীন সভ্যতায়ও ছাদে বাগানের ইতিহাস চোখে পড়ে। খ্রিস্টের জন্মেরও পূর্বে মেসোপটিয়াম ও পারস্যের জুকুরাক নামীয় পিরামিড আকৃতির উঁচু পাথরের স্থাপনায় বাগান ও ছোট গাছ লাগানোর জন্য স্থান নির্ধারণ করার নিদর্শন পাওয়া যায়।  শতকের পুরনো কায়রো শহরে বহুতল ভবন নির্মাণ হয় যার কোনোটি কোনোটি ছিল চৌদ্দতলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ভবনগুলোর সবগুলোর ছাদেই বাগান স্থাপন করা হয়েছিল সৌন্দর্যের অংশ হিসেবে যাতে সেচ দেয়ার জন্য প্রাণী শক্তির সাহায্যে চাকা ঘুরিয়ে পুলি দিয়ে নিচ থেকে ওপরে পানি তোলা হতো। ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যানও ধারণা করা হয় বিভিন্ন ছাদ ও বারান্দার সমন্বয়ে তৈরি তবে ঐতিহাসিকভাবে এ উদ্যানের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও তৎকালে বর্তমানে ইরাকের মসুল শহরের কাছেই আরেক ঝুলন্ত উদ্যানের নিদর্শন পাওয়া যায়।   
বিশ্বব্যাপী নগরায়ন বাড়ছে।বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর অনেক জায়গায় এর চাহিদা বাড়ছে।
শহরে ছাদ বাগান স্থাপন করা হলে শহরের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি পর্যন্ত কমে আসে। আমাদের শহরগুলোতে মাটির অস্তিত্ব দিন দিন কমে আসছে। ইট-কাঠের ভবনের বদলে দ্রুতই বৃদ্ধি পাচ্ছে ইস্পাতের কাঠামো ও কাঁচে মোড়ানো বহুতল ভবন। বিশেষ করে জানালায় কাঁচ ও বাণিজ্যিক ভবনের টেকসই স্থাপনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে হালকা কিন্তু শক্তিশালী ধাতব পাত, ফাইবার ও গ্লাস। সূর্য থেকে তাপ ও আলো এ ধাতব ও কাঁচের কাঠামোর একটিতে পড়ে অপরটিতে প্রতিফলিত হয়। বারংবার প্রতিফলনের দরুন সে নির্দিষ্ট এলাকার তাপমাত্রা আশপাশের এলাকার তুলনায় সামান্য বেড়ে যায় এবং শহরজুড়ে তৈরি হয় অসংখ্য হিট আইল্যান্ড বা তাপ দ্বীপ। ভবনে ব বাগান স্থাপন করা হলে বাগানের গাছের পৃষ্ঠদেশ এ তাপ শুষে নেয়  এবং গাছের গাছের দেহ থেকে যে পানি জলীয় বাষ্প আকারে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায় তা সে নির্দিষ্ট স্থানের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমিয়ে আনে। অসংখ্য ছাদ বাগান বা শহুরের গাছপালা এ প্রক্রিয়ায় শহরের উচ্চ তাপমাত্রাকে কমিয়ে আনে।
ছাদ বাগানকে কেতাবি ভাষায় যেমন কোনো সংজ্ঞায় নির্ধারিত করা যায়নি তেমনি এর কোনো সুনির্দিষ্ট মডেল এদেশে এখন পর্যন্ত গড়ে উঠেনি। পাকা বাড়ির খালি ছাদে অথবা বেলকনিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ফুল, ফল, শাকসবজির বাগান গড়ে তোলাকে ছাদে বাগান বলা হয়। বাড়ির মালিক তাদের আপন আপন উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে আপন ভাবনায় ভঙ্গিমায় সাজিয়ে তুলেন তাদের ছাদকে। এখানে টবে, বড় বড় ড্রাম কিংবা ট্রেতে রোপণ করা হয় নানা ফুল, ফল ও সবজি। সহনশীলতার দিকে লক্ষ্য রেখে নানা কাঠামোর ওপর স্থাপন করেন টব, মাচা। তবে এলোমেলো ও অপরিকল্পিত ছাদ বাগান কেবল সময়, অর্থ অপচয় করায় না। সেই সাথে ভবনেরও নানা ক্ষতি করে। তাই কিছু মৌলিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ছাদ বাগান গড়ে তোলা প্রয়োজন।